পহেলা নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও গ্রামীণফোন বাংলাদেশের তরুণদের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের পূর্ণ সম্ভাবনা নিশ্চিত করতে ’ফিউচার ন্যাশন’ শীর্ষক একটি প্লাটফরমের উদ্বোধন করেছে।
বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড (একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা থেকে প্রাপ্ত আর্থিক প্রবৃদ্ধি) এর সুফল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এক অনন্য অবস্থানে রয়েছে কারণ মোট জনসংখ্যার ৩৩ শতাংশেরও বেশী মানুষের বয়স ১৮-৩৫ বছরের মধ্যে (যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ২০১৭)। কিন্তু তরুণদের জন্য টেকসই ও পর্যাপ্ত আর্থিক সুযোগ সৃষ্টি করা না গেলে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড এর সুফল পাওয়া অনিশ্চিত থেকে যাবে।
সরকারি, বেসরকারী এবং উন্নয়ন খাতের সম্মিলিত উদ্যোগ ‘ফিউচার নেশন’ এর মূল লক্ষ্য হল মহামারী পরবর্তী সময় কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগের সুযোগ চিহ্নিত করে তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভবিষ্যত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করা।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি এবং ইয়াসির আজমান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, গ্রামীণফোন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে সরকারি, বেসরকারী এবং উন্নয়ন খাতকে একসাথে কাজ করতে হবে এবং তরুণদের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব খুব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে; তরুণদের মহামারীর আর্থ-সামাজিক প্রভাব এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত বিপ্লবের সমন্বয়ে সৃষ্ট বর্তমান পরিস্থিতির জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।’
‘যেহেতু বাংলাদেশ করোনা মোকাবেলায় সক্ষম হয়েছে, গ্রামীণফোনের সাথে আমাদের এই উদ্যোগ তরুণদের মহামারী থেকে পুনরুদ্ধারে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে’- সুদীপ্ত মুখার্জি |
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। এখন, ভবিষ্যত সম্ভাবনা উন্মোচনে এবং কোভিড-১৯ সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে, আমাদের অবশ্যই একসাথে কাজ করতে হবে এবং ডিজিটাল স্পেসে আমাদের তরুণদের জন্য সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে তাদের ভবিষ্যত উপযোগী দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করতে হবে। কোভিডের কারণে এই প্রয়োজনীয়তা আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন ভাবনা থেকেই ইউএনডিপির সাথে এই পার্টনারশিপ।”
আজমান আরও বলেন, “সঠিক দক্ষতা ও মানসিকতা তরুণদের ক্যারিয়ার বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দিবে, আর এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ইয়ুথ ডিভিডেন্ট কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
আগামী সাড়ে তিন বছরে দশ লাখ অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ‘ফিউচার নেশন’ তরুণদের কর্মসংস্থান উপযোগী দক্ষতা প্রদানে সহায়তা করবে এবং ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে, সরকারি, বেসরকারি এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে উদ্ভাবন এবং পার্টনারশিপের মাধ্যমে এটি সফল করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইউএনডিপি ও জিপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।